Breaking News

মৃত শিশুদের চুরি করে পুতুল বানাতেন যিনি



জেড নিউজ বিডি.কম রিপোর্টঃ কবর খুঁড়ে মেয়েদের মরদেহ চুরি করে, সেগুলোকে মমি করে তারপর মমিগুলোকে সুন্দর পোশাক পরিয়ে নিজ ঘরে সাজিয়ে রাখতেন আনাতলি মস্কোভিন। পশ্চিম রাশিয়ার সবচেয়ে বড় শহর নিঝনি নভগরোদ এর বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সি মস্কোভিন। তার এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর রাশিয়াজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।


ভয়াবহ মানসিক রোগে আক্রান্ত এই ব্যক্তিকে সম্প্রতি মানসিক রোগীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে ছেড়ে দেয়ার খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মৃতদের স্বজনরা।

আনাতলি মস্কোভিন এ পর্যন্ত কবর খুঁড়ে ২৯টি মেয়ের মরদেহ চুরি করেন। এসব মেয়েদের মমি করার পর তিনি ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপিস্টিক লাগিয়েছেন, হাঁটু পর্যন্ত লম্বা মোজা পরিয়ে সুন্দর পোশাক পরিয়ে পুতুলের মত সাজিয়ে রাখতেন। এমনকি তাদের মুখে মেকআপ পর্যন্ত লাগিয়েছেন তিনি। মস্কোভিনের ঘরজুড়ে এরকম মমি করা পুতুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এসব মমির বুকের খাঁচায় মিউজিক বক্সও জুড়ে দেয়া হতো। যেন তাদেরকে আসল পুতুলের মতই লাগে।

মৃত শিশুদের মরদেহ দিয়ে তৈরি প্রতিটা মমির নামও দিয়েছিলেন তিনি। নিয়ম করে তাদের জন্মদিনও পালন করা হতো। জন্মদিন উপলক্ষে নিজের শোওয়ার ঘরে পার্টিরও আয়োজন করতেন। তিনি মূলত ৩ থেকে ১২ বছর বয়সি শিশুদের মরদেহই চুরি করতেন।
মস্কোভিন ১৩ টি ভাষায় কথা বলতে পারেন। তিনি একজন ইতিহাসবিদ ছিলেন। আদালত তাকে বিশেষ প্রতিভা হিসেবে উল্লেখ করেছে। গোরস্থান, মৃতদের শেষকৃত্যানুষ্ঠান এবং মৃতদের ব্যাপারে তার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে।

মৃতদেহ চুরি করার কারণে ২০১২ সালের ২ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর দেখা গেছে তিনি প্যারানোইড সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। এধরনের রোগীদের বাস্তবতা স্পর্শ করতে পারে না। ফলে ২০১২ সালে একজন বিচারক জানিয়েছিলেন, বিচারের মুখোমুখি হওয়ার মত মানসিক সুস্থতা তার নেই। এজন্য তাকে মানসিক হাসপাতালে স্থানান্তর করার আদেশ দেন তিনি।

এদিকে চিকিৎসকরা জানান, তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন দেখেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। যদিও মৃত শিশুদের মায়েরা এই ব্যাপারে ব্যাপক আপত্তি জানিয়েছেন। এমন একজন মা নাতালিয়া, ৪৬ বছর বয়সি এই নারীর সন্তান ওলগাকেও কবর থেকে চুরি করে মমি করে রেখেছিলেন মস্কোভিন। মাত্র ১০ বছর বয়সে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছিল। নাতালিয়া চান তাকে আজীবন কারারুদ্ধ করে রাখা হোক।

মৃত শিশুদের স্বজনেরা মস্কোভিনের এই কর্মকাণ্ডকে যতই অপবিত্র এবং অশুভ হিসেবে বর্ণনা করুক না কেন মস্কোভিন কিন্তু তার কাজের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন এবং শিশুদের এভাবে ঠাণ্ডা কবরে রেখে দেয়াকে নির্দয় কাজ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, তোমরা তোমাদের শিশুকে ঠান্ডার মধ্যে ফেলে রেখেছিলে, আর আমি তাদেরকে ঘরের উষ্ণ পরিবেশে সুন্দরভাবে রেখেছি।

অবশ্য মস্কোভিন তার এই অদ্ভুত কাজের ব্যাপারে আদালতে একেক সময় একেক তথ্য দিয়েছেন। যেমন তিনি একবার বলেছিলেন, তিনি এসব শিশুদের পুনরায় জীবিত করার বৈজ্ঞানিক উপায় খুঁজছিলেন। আরেকবার তিনি উল্লেখ করেন, মমি বানানোর ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি এসব করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানান, এসব শিশুদের সঙ্গে তিনি কথাও বলতেন।

তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, কবরে রাখা এসব মৃতদের স্পর্শ করার পর তিনি শুনতে পান, তারা যেন বলছে, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। অবশ্য মৃত এসব শিশুদের ব্যাপারে তার কোন যৌন অনুভূতি কাজ করেনি বরং যৌনতাকে তিনি ঘৃণ্য কাজ বলেই মনে করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেড নিউজ বিডি.কম /রাকিব

No comments